গুপ্তচর ডেস্ক:
একের পর এক হত্যাকান্ড নরসিংদী জেলাকে বর্তমানে সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চরম ব্যর্থতায় বিগত ৮ দিনে ৩ খুনের ঘটনা ঘটেছে এখানে। এই তিনটি খুনের মধ্যে একজন অটো রিক্সাচালক, বাকি দুইজনই রাজনৈতিক নেতা। এসব হত্যাকাণ্ড দেখে চরম আতংক নিয়ে বসবাস করছেন নরসিংদী জেলার সাধারণ মানুষ।
প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে গত (২০ মে) সোমবার নরসিংদী সদর হাজীপুরে।অটো রিস্কা চালকের সাথে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে যাত্রীর ছুরিকাঘাতে নিহত হয় অটো রিক্সা চালক। মাত্র ২০ টাকার ভাড়া নিয়ে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম ইউনুস মিয়া(৩৭)। তিনি রায়পুরা উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের শফিউদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে যিনি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন তার নাম অজয় সাহা(১৯) সে হাজীপুর বউবাজারের শীতল সাহার ছেলে। নিহত ইউনুস মিয়া হাজিপুরে তার স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে বসবাস করতেন।তার মৃত্যুতে পরিবারটি আজ দিশেহারা।
দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ড ঘটে (২২ মে) বুধবার রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী গ্রামে। এই হত্যাকাণ্ডটি বাংলা সিনেমাকে হার মানিয়েছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে প্রতিপক্ষ পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।যেই ঘটনা নিয়ে নরসিংদী সহ সারা বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় উঠে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম সুমন। তিনি চরসুবুদ্ধি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে।উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সুমনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৬ বছর পরে সুমনের স্ত্রীর জমজ বাচ্চা হওয়ার কথা থাকলেও সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেনি সুমন।হতভাগ্য পিতা ঘাতকের নিষ্ঠুরতায় পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পাড়ি জমান পরপারে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস!!
অন্যদিকে নরসিংদী সদরে (২৩ মে) বৃহস্পতিবার চরাঞ্চলে আলোকবালীতে সরকারি প্রকল্পের বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের গোলাগুলি ও টেটা যুদ্ধে আহত হয় তিনজন।যুবলীগ কর্মী জাকির হোসেন ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জয়নাল আবেদিন গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন কুতুবউদ্দিন(৩৫) আব্দুল্লাহ(১৬) তৈয়েব মিয়া(১৮)।
সর্বশেষ নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে (২৮ মে) মঙ্গলবার নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন মেহেরপাড়া গ্রামে। সন্ত্রাসীরা রাতে নৃশংসভাবে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে তার বাড়ির সামনে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গুলিবিদ্ধ হন আরো কয়েকজন। পাপ্পু নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চাঞ্চল্যকর এসব রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে নরসিংদীর সর্বত্র বইছে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। সাধারণ মানুষ মনে করছেন আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে নরসিংদী জেলায়। কার ইশারায় নরসিংদীতে ঘটছে একের পর এক এই রক্তের হোলি খেলা!! এ ধরনের নৃশংসতম ঘটনায় কারা লাভবান হচ্ছে!!কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে কাদের??? এই প্রশ্ন নরসিংদীর সচেতন মহলের।।
Leave a Reply