নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদী পৌরসভার বৈধ ইজারাদার হয়েও টোল আদায়ে বাধার মুখে পড়েছেন মো. আলমগীর নামে এক ব্যবসায়ী। পুলিশের হস্তক্ষেপ ও ইজারাকর্মীদের একাধিক গ্রেফতারের ঘটনায় বন্ধ হয়ে গেছে টোল আদায় কার্যক্রম। অথচ তিনি পৌরসভার নির্ধারিত নিয়মে দরপত্রে অংশ নিয়ে প্রায় ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে বৈধ ইজারাদার হিসেবে দায়িত্ব পান।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী সরকার রাখি এক বছরের জন্য সিএনজি ও অটোবাইক স্ট্যান্ডের টোল আদায়ের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। মো. আলমগীর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ২১ লাখ টাকা ইজারামূল্যসহ ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করে আনুষ্ঠানিকভাবে ইজারা পান।
ইজারা প্রাপ্তির পর তিনি পৌরসভার নির্ধারিত স্থানগুলো—পুরাতন ও নতুন বাসস্ট্যান্ড, জেলখানা মোড়, রজনীগন্ধ্যা চত্বর, ভেলানগর বাজার, শিক্ষা চত্বর রেলক্রসিং ও বাসাইল আন্ডারগ্রাউন্ড গেট—থেকে টোল আদায় শুরু করেন। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ প্রশাসন তার টোল আদায়ে বাধা দেয় এবং গত ২৬ জুলাই তার দুই কর্মচারীকে “চাঁদাবাজি” মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়।
এ ঘটনায় প্রায় ৪০ দিন টোল আদায় বন্ধ থাকে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন তিনি। তাই ইজারাদার আলমগীর নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসকের কাছে জমাকৃত ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা ফেরতের আবেদন জানান। কিন্তু তার টাকা ফেরত না পেয়ে, তিনি আবারো টোল আদায় শুরু করেন।
পরবর্তীতে ৪ অক্টোবর আবারও পুলিশ টোল আদায়কারী দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনাকে প্রথম সারির প্রায় সবগুলো গণমাধ্যম “চাঁদাবাজদের হামলার শিকার পুলিশ কর্মকর্তা” শিরোনামে প্রকাশ করে, যা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এ নিয়ে এখন শহরজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—যদি আদালতের নিষেধাজ্ঞা থেকেই থাকে, তবে পৌরসভা কীভাবে ইজারা দিল? আর যদি ইজারা বৈধ হয়, তাহলে বৈধ ইজারাদারকে কেন চাঁদাবাজ বলা হচ্ছে? এগুলি কি ধরনের সাংবাদিকতা?
ইজারাদার মো. আলমগীর লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন, “আমি পৌরসভার বৈধ ইজারাদার হয়েও পুলিশের বাধায় টোল আদায় করতে পারছি না। বরং আমার কর্মচারীদের গ্রেফতার করে আমাকে সামাজিকভাবে অপমান করা হচ্ছে। এতে আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।”
এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার (ক্রাইম এন্ড অবস) জানান, নির্ধারিত জায়গা থেকে টোল আদায়ে আমাদের কোন বাধা নেই। অভিযোগ ছিল রাস্তা থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে,এজন্যই পুলিশ বাধা দিয়েছে।
এ ঘটনায় প্রশাসনিক নীরবতা ও আইনি অস্পষ্টতা ঘিরে এখন নরসিংদীতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন এক বিতর্ক—বৈধ ইজারাদারই কি তবে চাঁদাবাজ?
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমন *** উপদেষ্টা: নাছরিন রিমা স্মৃতি
কার্যালয় : উপজেলা মোড়, নরসিংদী। মোবাইল: ০১৯০৬০৬০০৫৭, ই-মেইল: msi873098@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক গুপ্তচর. All rights reserved.