
নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবার দ্বীন মোহাম্মদ মেম্বারের মিশন হয়ে ওঠে চুলা বাজার দখল। ধীরে ধীরে তিনি অগ্রসর হতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। চুলা বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজির মামলা চলমান রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি প্রায়ই বিভিন্ন দোকান থেকে মালামাল নিয়ে টাকা পরিশোধ করেন না, টাকা চাইতে গেলে তাদেরকে বাজার থেকে উঠিয়ে দেবার হুমকি প্রদান করেন। সপ্তাহে তিন দিন হাট বসে, প্রতি হাটে তিনি তার লোক দিয়ে বাজারে বসা দোকানগুলো থেকে নগদ অর্থ চাঁদা হিসেবে উত্তোলন করেন এবং সেই অর্থ বাজার উন্নয়ন-রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় না করে, তিনি ব্যক্তিগত খাতে খরচ করেন।
গত ২২ বছরে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক সালিশে বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এই সালিশগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি এবং তার সিন্ডিকেট অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে মনগড়া রায় প্রদান করেছেন।শুধু তাই নয় কেউ যদি এসব রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো, তাকে সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। ২০১৮ সাল পরবর্তী ইউপি নির্বাচনে তিনি নিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে, তার দুই স্ত্রীর একজনকে সাবেক স্বৈরাচার সরকারের শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের পুত্র সন্ত্রাসী সাদির সরাসরি হস্তক্ষেপে মহিলা ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করায় এবং আওয়ামী লীগে তিনি এবং তার পরিবারের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন ।
গত ৫ ই আগস্টে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর তাকে আবারো সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের এই দ্বীন মোহাম্মদ মেম্বারকে সামনে সারিতেই দেখা যায়। অর্থাৎ তিনি আবারও দলবদল করেছেন, তার মাতবরিকে টিকিয়ে রাখার জন্য।। ৫ ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে তিনি অন্তত দুইটি সামাজিক কলহের সালিশে উপস্থিত ছিলেন। যেখানে তিনি উভয় পক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে, সুবিচারের বদলে উভয়পক্ষকেই সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। গত ৬ই অক্টোবর সন্ধ্যায় তারই চাচাতো ভাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং সাবেক ইউপি সদস্য বাতেন মেম্বারের একমাত্র পুত্র গোলাপের কাছে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন, তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ব্যক্তিগত গাড়িটি চুলা বাজারে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখেন। এ সময় তিনি বাগেরহাট বাজার থেকে তার মেয়ের জামাতা সহ কিছু বখাটে ভাড়া করে এনে,গোলাপ সাহেবকে হেনস্থা করেন এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইলটি ছিনতাই করার চেষ্টা করেন। এই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল তার কনিষ্ঠ পুত্র, মাদকাসক্ত জিসান।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি সাবেক এই ইউপি সদস্য আবারো নতুন করে বিএনপিকে ব্যবহার করে তার ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। গ্রামবাসী দাবি করেন সাবেক এই ইউপি সদস্যকে এখনই আইনের আওতায় না নিলে আগামী দিনে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবেন এবং জনগণের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবেন।প্রকৃত প্রস্তাবে দ্বীন মোহাম্মদ মেম্বারের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তার একটাই পরিচয় সে সুবিধাবাদী, ক্ষমতালোভী, জুলুমকারী, অর্থলোভী ও দুর্বৃত্ত।
Leave a Reply