নিজস্ব প্রতিবেদক :
২০২৪ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর শিবপুর থানায় যোগ দেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসাইন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুরো শিবপুর উপজেলা। চারবার আইজিপি ব্যাচপ্রাপ্ত এই দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা শুধু দায়িত্বই পালন করছেন না, বরং শিবপুরবাসীর অভিভাবক হয়ে উঠেছেন তিনি।
তার দূরদর্শী নেতৃত্বে শিবপুরে কিশোর গ্যাং, মাদক, ডাকাতি আর মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের মতো দীর্ঘদিনের ব্যাধি কার্যত নির্মূল হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ—একসময় থানার আশেপাশে যাদের দালালি ও মাসোহারা আদায়ের রমরমা ব্যবসা চলত, ওসি আফজালের আগমনে সেসব একেবারে বন্ধ হয়েছে। এখন সাধারণ মানুষ যে কোনো সমস্যায় সরাসরি তার কাছে গিয়ে ন্যায়বিচার পাচ্ছেন।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তার সাফল্যের কথা শুধু থানার ভেতরে নয়, প্রতিটি গ্রামেও আলোচিত। হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে ছোট-বড় অপরাধ দমনে তিনি দেখিয়েছেন সাহস ও দক্ষতার অনন্য দৃষ্টান্ত। শিবপুরের ইতিহাসে এর আগে এমন কার্যকর ওসি আসেননি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। শিবপুরে অপরাধীদের আতঙ্ক তিনি।সাধারচর রোডে ডাকাতির ঘটনায় চাউলের ট্রাকসহ ৭২ ঘন্টার মধ্যে ডাকাত গ্রেফতার। মামলা নং-০৮, তাং-১৮/০৭/২০২৫খ্রিঃ,
বৈলাব ডাবল মার্ডারের ১৮ ঘন্টার মধ্যে মূল আসামী গ্রেফতার মামলা নং-১৮, তাং-১১/০৯/২০২৫খ্রিঃ।কারারচরে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ৬ ঘন্টার মধ্যে ধর্ষণকারী গ্রেফতার। মামলা নং-৩৯, তারিখ- ২৮/০৯/২০২৫খ্রিঃ; এছাড়াও মোটরসাইকেল ছিনতাইকারী তিনজনকে মোটরসাইকেল সহ গ্রেফতার করে হইচই ফেলে দিয়েছেন তিনি শিবপুর জুড়ে।
নরসিংদী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার জানান, আমার জানামতে ওসি কাউকে অহেতুক হয়রানি করেন এরকম তথ্য নেই। তিনি বিভিন্ন মসজিদে যান এবং কুরআনের আয়াত ভালো জানেন। শিবপুরে তার ভূমিকা প্রশংসনীয়।
উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আরিফ মৃধা বলেন, “ওসি আফজাল হোসেন মামলা বাণিজ্যের মতো কাজে কখনো জড়াননি। বরং ডাকাতি আর কিশোর গ্যাং দমনে তিনি শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিয়েছেন।”
শিবপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মোস্তাফিজুর রহমান কাউসার জানান, “আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল মাদক আর কিশোর গ্যাং। ওসি আফজাল তাদের বড় বড় নেতাদেরও আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছেন।”
জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুন বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েকটি সমস্যা নিয়ে তার কাছে গিয়েছিলাম। প্রতিবারই তিনি যথাযথ সমাধান দিয়েছেন।”
শিবপুর উপজেলার একজন সচেতন নাগরিক শাহজালাল পলাশ জানান, শিবপুরের ওসি পুলিশ সুলভ আচরণ করছেন না,তিনি একজন মানবিক মানুষ সুলভ আচরণ করছেন। এতে করে যারা দাদনখোর সুবিধাবাদী তাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে। তিনি খুবই ভালো মানুষ এবং ডাকাতি জিরো টলারেন্সে নিয়ে এসেছেন। তিনি ধৈর্য সহকারে সাধারণ মানুষের কথা শুনেন এবং সেটি সমাধান করেন। তিনি একজন অভিভাবকের মত।
কামরাবো গ্রামের মোহাম্মদ আলী জানান, “আমার একটি জটিল সমস্যার সমাধান তিনি সাহস ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে করেছেন। কখনো একটাকাও নেননি বা চাননি।”
অন্যদিকে সৈকারচর গ্রামের কারিমা নামের এক নারী জানান, “তিন বছর ধরে এক বখাটে আমাকে অশ্লীল ছবি দিয়ে হয়রানি করছিল। বিষয়টি জানালে ওসি দ্রুত ব্যবস্থা নেন এবং অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। আমার কাছ থেকে তিনি কোনো অর্থও নেননি।”
সব মিলিয়ে, শিবপুরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ওসি আফজাল হোসাইন আজ এক উজ্জ্বল নাম। তার সততা, দক্ষতা ও মানবিক ব্যবহারে শিবপুরবাসীর আস্থা আজ অটুট। শিবপুরবাসীর কণ্ঠে একটিই কথা— “এমন ওসি আমরা আগে কখনো পাইনি।”
Leave a Reply