সম্পাদকীয়:
১৯৭০ সালে ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসনামলে প্রথম পাকিস্তানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ মুজিবুর রহমান জয়লাভ করলেও ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা করে পাকিস্তানিরা।ফলে গণতন্ত্র রক্ষায় ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে ৩০ লক্ষ শহীদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা হয়।
শেখ মুজিবর ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে বাকশাল কায়েম করলে,দেশে রাজনীতিক ক্যু হয় ,তাকে সপরিবারে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়। ক্ষমতা দখলের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয় এদেশে।খন্দকার মোস্তাক ,সায়েম ,জিয়াউর রহমান,এরশাদ সবাই যার যার মত করে ক্ষমতা নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করেছেন।তারা ক্ষমতা রাখতে গিয়ে মানুষের জীবন নিয়েছেন।তারপর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া একতরফা নির্বাচন করে কিছুদিন ক্ষমতা রাখেন।আর গত দুইটি নির্বাচন দশম, একাদশ শেখ হাসিনা তার নিজের মতো করে করেছেন।বিতর্কিত এবং ত্রুটিপূর্ণ এই দুটি নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচনা সমালোচনার ঝর বইছে।কিন্তু তাতে কর্ণপাত করছেন না আওয়ামী লীগ ।ক্ষমতা নিজের কাছে রাখতে চাচ্ছেন।বর্তমানে বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত তাদের ২৩ নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন বলে দাবি করেন দলটি।তারা চান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।তাদের এই আন্দোলনের যুক্তিগতাও রয়েছে।কারণ একটা দেশের নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে সেটা নির্ধারণ করবে সব দল মিলে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন।সংবিধান এদেশের জন্য, সংবিধানের জন্য দেশ নয়।একটা দেশে নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে সেটা নির্ধারিত করবে রাজনৈতিক দল কোন সংবিধান নয়।দুই দলের দুই দিকে অনড় অবস্থানের কারণে রাজপথে শক্তির মহড়া চলবে খুব শীঘ্রই।আর এতে করে ঝরে যাবে অসংখ্য নিরীহ তাজা প্রাণ।কিন্তু এ দেশের অধিকাংশ লোকই পছন্দ করেন না এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা।দেশের বেশিরভাগ মানুষ চান শান্তিপূর্ণভাবে এদেশে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।হয়তো এদেশে আবারো গণতন্ত্র আসবে কিন্তু যারা প্রাণ দিয়ে চলে যাবে তারা কি আর কখনো আপন জনের কাছে আসবেন ফিরে!?স্বাধীনতার 50 বছর পরেও গণতন্ত্রের জন্য আর কত প্রাণ দিতে হবে এদেশের মানুষকে!
Leave a Reply